আর একটা একুশে ফেব্রুয়ারি চলে গেল। সারাদিন ফেসবুকে সবার আপডেট পড়ে মনটা ভালো হয়ে যাচ্ছিল। যে যার মতো করে মাতৃভাষার প্রতি নিজের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তা নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। কিন্তু একটা মানুষের কথা আমার মাঝে মাঝে মনে পড়ে, একুশে ফেব্রুয়ারিতে তাঁর কথা বলাটা প্রাসঙ্গিক মনে হল। ভদ্রলোকের নাম মেহদী হাসান খান। বাংলা ইউনিকোড লেখার সফটওয়্যার অভ্র কি বোর্ড-এর জনক উনি। শুনেছি আরও অনেক বাংলা ইউনিকোড সফটওয়্যার আছে, কিন্তু এ ব্যাপারে আমার প্রথম আর শেষ ভালোবাসা অভ্র কি বোর্ড। এত সুবিধাজনক বাংলা লেখার উপায় ছেড়ে আর কিছু ব্যবহার করার কথা ভাবতে পারি না।
গত ৫ বছরে আমার নিজের সমস্ত লেখা, আমার সম্পাদিত ওয়েবম্যাগ সৃষ্টির সমস্ত লেখা এবং গত ২ বছর ধরে সৃষ্টিসুখ থেকে প্রকাশিত সমস্ত বই (৪৮টা) অভ্রতে কম্পোজ করা হয়েছে। এর বদলে মেহদী হাসান একটা পয়সাও আমার থেকে দাবি করেননি। শুধু আমি কেন, কারোর থেকেই কোনও প্রত্যাশা নেই তাঁর। প্রতি ডাউনলোড পিছু এক ডলার করে নিলেও তিনি নিশ্চয় এতদিনে কোটিপতি হয়ে যেতেন। কিন্তু তার বদলে অভ্রকে করে তুলেছেন বাংলা লেখার একটা সহজ হাতিয়ার। ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসারের কাজে মেহদী হাসান খানের এই অগ্রণী ভূমিকা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অক্ষয় হয়ে থাকবে।
আমার কাছে তাই মেহদী হাসান খান একজন ভাষা সৈনিক। তাঁর হাতে তুলে দেওয়ার মতো কোনও উপহার বা পুরস্কার আমার নেই। কিন্তু আজ থেকে সৃষ্টিসুখ প্রকাশন থেকে যত বই প্রকাশিত হবে, সব বইয়ে এই কথাটা অবশ্যই লেখা থাকবে — “বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ মেহদী হাসান খান, ওমিক্রন ল্যাব ও অভ্র কিবোর্ড ডেভালপমেন্ট টিম।”
অভিবাদন, টুপি খোলা অভিবাদন।
3
Leave a Reply