গত এক মাসে বেশ কিছু মানুষকে শুনিয়েছি গল্পটা। আবার একবার হয়ে যাক, যাঁরা এবার কলকাতা বইমেলায় আসতে পারেননি, খাস করে তাঁদের জন্যে।
বইমেলার প্রথম দিন মীর এসেছেন সৃষ্টিসুখের স্টলে। বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন শ খানেক মানুষ। দুটো গেটের একটা বন্ধ করে স্টলের মধ্যে আমরা কয়েকজন এবং অবশ্যই মীর। ‘মীর এই পর্যন্ত’ বইটার মোড়ক উন্মোচন হল, ফুল দেওয়া-নেওয়া হল, কিছু কথাবার্তা হল। তারপর শুরু হল সেই বহু-আকাঙ্ক্ষিত অটোগ্রাফ সেশান। ভিড়ের চাপে দ্বিতীয় কোলাপসিবল গেটটাও বন্ধ করে দিতে হল মিনিটখানেকের মধ্যেই। মীরের সই নেওয়ার জন্যে আগে থেকেই বইটা কিনে রেখেছিলেন পাঠক-ক্রেতারা। গেটের ফাঁক থেকে নিজেদের কপি বাড়িয়ে দিতে থাকলেন। সই নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা অনুরোধ — “আমার স্ত্রীর নাম ডালিয়া, সেটা লিখে দিন”, “মীরদা, আমার হাতে একটা সই করে দিন” ইত্যাদি। অত মানুষের ভিড় সামলে যতটা করা যায়, মীর হাসিমুখে তার থেকে বেশিই করার চেষ্টা করছিলেন। এমন সময় একজন বললেন — “মীরদা, এরপর যখন ‘মীর শেষ পর্যন্ত’ বইটা বের হবে, তখন সই নিতে আসব।” মুখের হাসিটা বজায় রেখেই তিনি উত্তর দিলেন, “আমায় এত তাড়াতাড়ি মারবেন না। আমি আরও দীর্ঘদিন লাইফটা এনজয় করতে চাই।” সেই ভদ্রলোক তবুও অনড় — “মানুষ মাত্রই তো মরণশীল।” মুহূর্তের জন্যে গম্ভীর হল মীরের মুখ। অটোগ্রাফ দিয়ে কপিটা সেই ভদ্রলোকের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার সময় স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বললেন — “আমি আসলে বেশি মাত্রায় সহনশীল।”
ওমনিস্কোপ
Homepage of Rohon Kuddus
Leave a Reply