কোথা থেকে শুরু করব? এসো, বরং খলতপুরের কথা বলি। সেটা ১৯৯২-এর শেষ দিকে। প্রথম শোনাতে ভুল করে খলতপুরকে খড়গপুর ভেবেছিলাম। আমার থোড়াই দোষ? ভূ-ভারতে এমন নাম কে শুনেছে তখন? সেখানে পৌঁছতে হলে প্রথমে বাগনান থেকে আমতা যেতে হবে ৮০ নাম্বার বাসে। তারপর আমতা থেকে উদয়নারায়ণপুর আবার বাস। তারপর রিকশা পেলে রিকশা। আর ভাড়ায় না পোষালে আবার একটা বাস। খলতপুর? উঁহু! খলতপুর আবার কোন জায়গা? বাস কনডাকটরকে বলতে হবে বাঁশতলা। অন্তত তখন তো ঐ ব্যবস্থাই ছিল। আর বাঁশতলায় নেমে যদি বলো “আল আমীন মিশন যাব।”, তাহলে রাস্তার ভিখারী থেকে চা-দোকানের মালিক সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করবে। বলো “মাদ্রাসা যাব।” তারা আঙুল তুলে দেখাবে “ঐ যে রাস্তার ওপারে।” আরে তাই তো! একটা কলাপাতা রঙের দোতলা বাড়ি। ওটাই বুঝি মাদ্রাসা… থুড়ি, আল আমীন মিশন?
জ্বী জনাব। ওটাই সেই আজব চিড়িয়াখানা। যেটা ১৯৯২ থেকে ঠিক চোদ্দ বছর পর মাধ্যমিকে প্রথম স্থান নেবে এবং তারও বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই নরেন্দ্রপুর বা সাউথ পয়েন্টের মতো ইস্কুলগুলোকে গড় রেজাল্টে অনেক পেছনে ফেলে দেবে। কিন্তু ঐ যে যাকে বলে বিজ্ঞাপনের যুগ। একটা হৈ-চৈ করার মতো কিছু না করলে তুমি জানতেই পারবে না। তাই তুমি হয়তো মাধ্যমিকে প্রথম হওয়ার পর জানতে পারলে আল আমীন মিশন। বা এখনও হয়তো জানতেই পারোনি। কিন্তু জানো আর না-ই জানো। এখন দেখো। ঐ যে রাস্তার ওদিকে একটা দোতলা বাড়ি। ওটাই আপাতত সন ১৯৯২-৯৩’এর আল আমীন মিশন। কিন্তু ঐ আমতা-উদয়নারায়ণপুর-বাঁশতলা এই চক্করে আমি কী করে পড়লুম? এসো সেই গল্প শোনাই এবার।
0
Leave a Reply